২৭ মার্চ, ২০১৩

বাবা হয়ে নানান কিছু - ১

    সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই মেজাজটা গেলো খিঁচড়ে। আমার ছেলে দিব্যি ঘুমোচ্ছিলো। আমি শোওয়ার ঘরেই এটা-ওটা কি করছিলাম। হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে উঠে আমায় দেখে এবং মাকে না দেখে ভয়ানক আপত্তি জানাতে শুরু করলো। কেঁদে-কেটে হাত পা ছুঁড়ে একশা।
    কি মুস্কিল! ওরে আমি তো তোর বাবা রে। না, মাকেই চাই। কেন চাই? কি দরকার? না, সেটা বলাও যাবে না।
    খুব ঘোরতর অবস্থা বুঝে একটা জম্পেস বকা দিয়ে চলে এলাম। আসার সময় ওর মার মুচ্‌‌কি হাসিটা চোখ এড়ালো না। বিয়ের শুরুতে কি হতো জানি না, কিন্তু এখন ব্যঙ্গটা গায়ে লাগলো।
যাদের সন্তান-সন্ততি নেই, তাঁরা হয়তো ভাবছেন, আহা কি বীরপুরুষ, বকুনি দিলেন। কিন্তু যাঁরা যানেন তাঁরা বুঝতেই পারছেন, এটা যুদ্ধক্ষেত্রে পৃষ্ঠপ্রদর্শনের পূর্বে একবার ভেরী বাজিয়ে আসা ছাড়া আর কিছুই নয়। বা ছোটোবেলায় স্কুলে যা হতো। মুখ ভেঙিয়ে দে ছুট্।
    কিন্তু তারপর থেকেই আমি ভাবছি। আজকেই প্রথম এই ঘটনা নয়। কেন এই বৈষম্য? আজকালকার চাকরিজীবী মা-বাবার দলে আমরাও পড়ি। এমন নয় যে আমার স্ত্রী আমার তুলনায় অনেক বেশী সময় বাড়িতে থাকেন। এবং সত্যি কথা বলতে আমার ছেলের আবদারগুলো বেশী আমার সঙ্গেই হয়। কারণ জানে যে ততে সাফল্যের সম্ভাবনা বেশী। তারপর এই ব্যাপার কেন?
    ভেবে ভেবে বার করলাম যে আজকালকার ছেলে তো তাই ঠিক জানে কখন কি ভাবে "ম্যানেজ" করতে হয়। এই যেমন একটু বাদে উঠে 'চলো বাবা খেলি' বললেই আমি গলে যাবো। আবার গত রাতে ঘুমোচ্ছিলো না বলে মার ধমকটা আজ সকালে ম্যানেজ করলো।
    এখনকার দিনে এই গুণটা বোধহয় ভালোই। নাকি খারাপ? ঠিক না করতে পেরে আরো এক কাপ চা খেয়ে ফেললাম। এবং এই ব্লগটা লিখে ফেললাম।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন